খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৮ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্সে বাসের ধাক্কায় নিহত ৫, গুরুত্বর আহত আরও ১০
  জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের রায় আগামী ২৭ মে
  মধ্যরাতে ব্যাংককের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ

বাবাকে হত্যার পর ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে মেয়ের আত্মসমর্পণ

গেজেট ডেস্ক

ঢাকার সাভারে আব্দুস সাত্তার (৫৬) নামের এক ব্যক্তি ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন। পুলিশ বলছে, আব্দুস সাত্তারের মেয়ে জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোনকল করে তাঁর বাবাকে হত্যার কথা জানান এবং আটকের অনুরোধ করেন। পরে ২৩ বছর বয়সী ওই তরুণীকে আটক ও তার বাবার লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার ভোরে সাভার পৌরসভা এলাকা থেকে আব্দুস সাত্তারের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার বাড়ি নাটোরের সিংড়া উপজেলায়। তিনি স্ত্রী মারা যাওয়ার পর মেয়েকে নিয়ে ওই এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং কম্পিউটারের দোকানে চাকরি করতেন।

আটক তরুণীর অভিযোগ, মা মারা যাওয়ার পর তিনি তার বাবার হাতে ধর্ষণের শিকার হয়ে মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় আব্দুস সাত্তার গ্রেপ্তার হয়ে কয়েক মাস পর জামিনে বের হন। এরপর বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণচেষ্টা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে ক্ষোভে তার বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

তরুণী বলছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গতকাল বুধবার রাতে তিনি তার বাবাকে ভাতের সঙ্গে ঘুমের বড়ি মিশিয়ে খাওয়ান। এরপর ভোর ৪টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে বুকে ও পেটে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ৯৯৯-এ খবর দেন।

সাভার থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা (ডিউটি অফিসার) আব্দুর রশিদ বলেন, ভোর ৪টার দিকে এক তরুণী জরুরি সেবার ৯৯৯-এ ফোনকল করে তার বাবাকে হত্যার কথা জানান এবং তাকে আটকের অনুরোধ করেন। পরে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশে পাঠিয়ে ওই তরুণীকে আটক ও তার বাবার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়।

পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় ওই তরুণী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার বাবা পরপর তিনটি বিয়ে করেছিলেন। আমার মা তার তৃতীয় স্ত্রী। আমাকে অনেক ছোট রেখেই মা মারা যান। এরপর থেকে বাবার কাছেই আমি বড় হয়েছি। মা না থাকায় একসময় আমি বাবার লালসার শিকার হই। ২০২২ সালে আমি বাবার বিরুদ্ধে সিংড়া থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করি। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর তিনি জামিনে বের হন। এরপর বাবা তার ভুল বুঝতে পারেন এবং আমার সঙ্গে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেন। আমিও তাকে ক্ষমা করে দেই।’

তরুণী আরও বলেন, ‘আমাকে নিয়ে বাবা একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন মাস ছয়েক আগে। ওই বাসায় আমি আর আমার বাবা দুজনেই থাকতাম। কিন্তু তিনি পুনরায় আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এতে আমার ভেতরে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ক্ষোভ আর কষ্ট থেকে আমি বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করি। পরিকল্পনা অনুযায়ী গতকাল (বুধবার) দিবাগত রাতে ভাতের সঙ্গে তাকে ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়াই। এরপর ভোর ৪টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে হত্যা করে পুলিশে খবর দিই।’

সাভার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইমরান হোসেন বলেন, ‘মেয়েটি বাবার কাছে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এবং সেই ঘটনায় তিনি মামলা করেছিলেন। আবারও তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। এই ক্ষোভ থেকেই বাবাকে হত্যা করেছেন বলে মেয়েটি আমাদের জানিয়েছেন।’

এসআই ইমরান হোসেন আরও বলেন, ‘মেয়েটির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাকে আটক করা হয় এবং তার বাবার লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। লাশের বুকে ও পেটে বেশ কিছু ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!